মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১৮:৫৩

দুই মাস পর মধ্যরাতে শুরু হচ্ছে ইলিশ শিকার

দুই মাস পর মধ্যরাতে শুরু হচ্ছে ইলিশ শিকার

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : দেশের ছয় অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে মধ্যরাতে। ফলে দুই মাস পর জাল-নৌকা নিয়ে মাছ শিকারে নামছেন জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা সফল হয়েছে দাবি করে এবার রেকর্ড পরিমাণ ইলিশ উৎপাদনের আশা করছে মৎস্য বিভাগ।

দুই মাস পর মাছ ধরা শুরু হওয়ায় ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর জেলেরা নতুন উদ্যমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ উপলক্ষ্যে মৎস্য ঘাট ও জেলে পল্লিতে রীতিমতো উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। আড়ৎগুলোতেও ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।

এর আগে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বাড়াতে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস দেশের ছয় অভয়াশ্রমে সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলার প্রতিটি ঘাটেই সাগরে ও নদীতে নামার জন্য জেলেদের প্রস্তুতি চলছে। ঘাটে বেঁধে রাখা নৌকাগুলো মেরামত করছেন জেলেরা। আবার কেউ কেউ জাল বোনার কাজে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।

ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে কেনা-বেচা জমে ওঠার পাশাপাশি সরগরম হয়ে উঠবে মাছের আড়ৎ। ব্যবসায়ীদের আশা, পর্যাপ্ত ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ পাবেন জেলেরা।

ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলছেন, অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। ভোলায় চলতি অর্থ বছরে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৯১ হাজার মেট্রিক টন।

এছাড়া চাঁদপুর সদরের ইব্রাহীমপুর, লক্ষ্মীপুর মডেল, হানারচর ইউনিয়ন ও হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়ন মেঘনা পাড়ের জেলে পল্লীতেও দেখা গেছে জেলেদের ইলিশ ধরার প্রস্তুতি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান দুই মাসের জাটকা রক্ষার অভিযান সম্পর্কে জানান, এ বছর ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় অভয়াশ্রম এলাকায় ১০টি স্পিডবোট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

তিনি বলেন, এ বছর জেলা টাস্কফোর্সের কঠোর অবস্থান থাকায় জেলেরা নদীতে নেমেছে কম। তারপরেও যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নেমেছে তার মধ্যে প্রায় তিন শতাধিক জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়েছি। দুই মাসে প্রায় ৫০ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট অন্যান্য জাল, তিন টন জাটকা ও ৬০টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করা হয়েছে। আটক জেলেদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা।

অপরদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এবারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮ হাজার মেট্রিক টন। গত বছরই ২৫ হাজার ইলিশ ধরতে সক্ষম হয়েছি আমরা। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়ানো হয়েছে।গত দুই মাস, মাছ ধরা বন্ধ ছিলো ভোলার তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তমের ১০০ কিলোমিটার এবং মেঘনার ইলিশা থেকে চরপিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটারের দুটি অভয়াশ্রমে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু কাউসার দিদার জানান, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে এবার অভিযান অনেক ভালো হয়েছে। নদীতে প্রচুর জাটকা বিচরণ করতে আমরা দেখেছি। যা সাগরে ফিরে যাচ্ছে। পরবর্তী সময়ে প্রজননের উদ্দেশ্যে আবার নদীতে ফিরে আসবে। আশা করি এ বছর ইলিশ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকবে।
উত্তরণবার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK